সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে - সিজারের পরে ইনফেকশনের লক্ষন
বর্তমান যুগের মেয়েরা প্রসব যন্ত্রণা সহ্য করার ভয়ে কোন সমস্যা না থাকলেও ইচ্ছাকৃতভাবে সিজার করে শিশুর জন্ম দেওয়ার পদ্ধতিটি বেছে নেই। কিন্তু এদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জানে না যে সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে। সাধারণত সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে সেই বিষয়ে জ্ঞান বা ধারণা না রাখার কারণেই আমরা সিজারিয়ান ডেলিভারি টি বেশি পছন্দ করে থাকি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে - সিজারের পরে ইনফেকশনের লক্ষন
- কোন কোন লক্ষণ গুলো দেখলে বুঝবেন সিজার করা দরকার
- সিজারের পরে ইনফেকশনের লক্ষন
- সিজারের কতদিন পরে যৌন মিলন করা উচিত
- সিজারের পর কেন এবং কতদিন বেল্ট ব্যবহার করতে হয়
কোন লক্ষন গুলো দেখলে বুঝবেন সিজার করানো দরকার
সিজারের পরে শরীরের দীর্ঘমেয়াদী কিছু খারাপ প্রভাব পড়লেও অনেক ক্ষেত্রে এমন
পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়ায় যে সিজার করার প্রয়োজন পড়ে। সিজারের পর কি কি
সমস্যা হয় এ বিষয়গুলো জানার পর অনেকেই হয়তো সিজার করতে চাইবেন না কিন্তু
তারপরেও অনেক সময় সিজার করতে না চাইলেও পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিজার করার
সিদ্ধান্ত নিতে হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে এমন কিছু পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে যায় যে
পরিস্থিতিতে সিজার না করালে মা ও শিশু দুজনেরই মৃত্যু ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। আসুন
তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক কোন লক্ষণ গুলো দেখলে বুঝবেন সিজার করানো দরকার।
নিচে দেওয়া হলো, কোন লক্ষণ গুলো দেখলে বুঝবেন সিজার করানো দরকার এবং এই
পরিস্থিতি গুলোতে খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।
- প্রসবের রাস্তার চেয়ে শিশুর মাথার আয়তন বেড়ে গেলে সিজার করাতে হয় । নরমাল ডেলিভারি করাতে গেলে ও শিশু দুজনেরই থাকে।
- জরায়ু বা প্রসবের রাস্তায় যদি টিউমার থাকে তাহলে সিজার করাতে হবে।
- গর্ভ অবস্থায় গর্ভবতী মা যদি শারীরিকভাবে দুর্বল থাকে তাহলে তার পক্ষে সিজার করা ভালো। কারণ দুর্বল অবস্থায় নরমাল ডেলিভারি হওয়াতে গেলে এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে হয়তোবা সে মৃত্যুর মুখে পতিত হতে পারে।
- মায়ের পেটের ভিতরে কিছু ঠিক জায়গা মতন না থাকলে সিজার করিয়ে নিতে হবে।
- প্রসবের রাস্তা দিয়ে যদি আম্বিলিক্যাল কর্ড বেরিয়ে আসে তাহলে সিজার করাতে হবে।
- হাই প্রেসার বা ডায়াবেটিস থাকলে
- লেবার পেইন ওঠার ৬ থেকে ১৪ ঘন্টার মধ্যে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব না হলে সিজার করিয়ে নিতে হবে।
- প্রসবের রাস্তা দিয়ে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ অথবা পানি ভাঙার সমস্যা দেখা দিলে।
সিজারের পরে ইনফেকশনের লক্ষণ
সিজারের পরে কাঁটা স্থানে বিভিন্ন কারণে ইনফেকশন দেখা দিতে পারে, যদিও শতকরা
প্রায় ৩-১৫% শতাংশ মহিলার ক্ষেত্রে যাদের পরে ইনফেকশনের সমস্যা হয়ে থাকে
তার পরেও সকলেরই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখা প্রয়োজন । সিজারের
পরে ইনফেকশন এর লক্ষণ গুলো আসুন জেনে নেওয়া যায়। আপনার মধ্যে যদি সিজারের
পরে ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তাহলে দেরি না করে দ্রুত ডাক্তারি
পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং রেজিস্টার ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ সেবন করে দ্রুত
ইনফেকশন সারানোর ব্যবস্থা করুন। ইনফেকশনের লক্ষণগুলো হলো,
- পেটের ভিতরে প্রচন্ড যন্ত্রণা হওয়া
- সিজারের কাটা জায়গার আশেপাশে লাল হয়ে যাওয়া
- কাটা জায়গার চারপাশ ফুলে ওঠা এবং নরম নরম অনুভব হওয়া
- প্রস্রাব করার সময় যন্ত্রণা হওয়া
- ব্লিডিং এর সাথে জমাট বাধা রক্ত আসে
- অতিরিক্ত মিটিং এর জন্য কিছুক্ষণ পরপর ব্যাট চেঞ্জ করার প্রয়োজন হলে
- হাত-পা ফুলে গেলে
- দুর্গন্ধযুক্ত ব্লিটিং বা তরল বের হলে
সিজারের কতদিন পরে যৌন মিলন করা উচিত
অনেকেরই এই প্রশ্নটি থাকে যে, সিজারের কতদিন পরে যৌন মিলন করা উচিত। আসুন
তাহলে আজকে এ বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক, সিজারের পরে সাধারণত ৯০ দিনের আগে যৌন
মিলন করা ঠিক নয়। সিজারিয়ান ডেলিভারি হওয়ার ৯০ দিন পরে জরায়ু মুখ
পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হলে তারপরে যৌন মিলন করা উচিত।
সিজারের পর কেন এবং কতদিন বেল্ট ব্যবহার করতে হয়
সাধারণত কাটা স্থানে যাতে করে আঘাত না লাগে এবং হাঁচি কাশি , হাঁটাচলা ,
উঠাবসা ইত্যাদি কাজের সময় যাতে করে কাটায় স্থানে আঘাত লেগে কোন ক্ষতের
সৃষ্টি না হয় এই কারণে বেল্ট ব্যবহার করতে দেয়া হয়। সিজারের পরে
সেলাই শুকানোর পর থেকেই বেল্ট ব্যবহার শুরু করা উচিত এবং অন্ততপক্ষে ৪০ দিন
পর্যন্ত বেল্ট ব্যবহার করলে ভালো হয়।
শেষ কথা, সাধারণত সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে এ ব্যাপারে সাবধান এবং সচেতন করায় আজকের এই পোস্টের মূল্য লক্ষ । আশা করছি সিজারের পর তৃতীয় সমস্যা হতে পারে, এই প্রশ্নের মাধ্যমে এই তথ্যগুলো জানতে পেরে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। সিজারের কিছু খারাপ দিক থাকলেও অনেক সময় মা ও শিশুর জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে বা শিশু সুস্থ রাখার জন্য সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রয়োজন পড়ে। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব হলে যদি মা এবং শিশু শারীরিক প্রতি সম্ভাবনা থাকে তাহলে অবশ্যই সিজার করে বাচ্চা প্রসব করা উচিত। আর যদি নরমাল ডেলিভারিতে কোন সমস্যা না থাকে তাহলে নরমাল বা প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চা প্রসব করা সবচাইতে ভালো।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url