ঘরে ব্যায়াম করার নিয়ম

আমাদের জীবনে সুস্থ থাকতে এবং কর্মক্ষম থাকার জন্য ব্যায়াম করা অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু এই ব্যায়াম শুরু করার আগে আমাদেরকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে ব্যায়াম করার সঠিক সময় সম্পর্কে। আমরা যদি ব্যায়াম করার সঠিক সময় না জেনেই শরীরচর্চা শুরু করে দি তাহলে কখনোই আমরা ব্যায়ামের সুফলগুলো পাবোনা।

যেহেতু ব্যায়াম করার আগে আমাদের জেনে নেওয়া প্রয়োজন ব্যায়াম করা সঠিক সময় সম্পর্কে । এই কারণে এই পোস্টের মাধ্যমে ব্যায়াম করার সঠিক সময় সম্পর্কে সঠিক তথ্যগুলো রাখা হয়েছে । তাই আপনি যদি ব্যায়াম করার সঠিক সময় এবং ব্যায়াম সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে সেগুলো জানার জন্য পোস্টটি করতে থাকুন।

সূচিপত্রঃ ব্যায়াম করার সঠিক সময়

ব্যায়াম করার সঠিক বয়স

অনেকের মধ্যেই এ প্রশ্ন জেগে থাকে ব্যায়াম করার সঠিক বয়স কোনটি। আসলে ব্যায়াম করার সঠিক বয়স নেই যে কোন বয়সেই ব্যায়াম করা যায়। তবে বয়স অনুযায়ী ব্যায়ামের কিছু তারতম্য ঘটে । এ কারণে ছোট বড় সকলেই নিয়মিত কিছু না কিছু ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম করার সঠিক বয়স বা কোন বয়সে কোন ধরনের ব্যায়াম করা উচিত সে সম্পর্কে।

১৫ থেকে ২০ বছর বয়সীদের ব্যায়ামঃ এই বয়সটিতে সাধারণত মানুষ শারীরিক ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা অনুভব না করলেও আসলে এই বয়সটিতে ব্যায়ামের খুব বেশি প্রয়োজন । কারণ এই বয়সটি হল পেশী গঠনের সময় এই বয়সে বেশি গঠন করতে না পারলে বৃদ্ধ বয়সে সুস্থ থাকার আশা করা যায় না, ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সীদের সাধারণত যে প্রেমগুলো করা উচিত, 

ভার তোলা

পুস আপ

২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের ব্যায়ামঃ ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে যে ব্যায়ামগুলো করার জন্য উপদেশ দেওয়া হয় সেগুলো হল।

ক্রস ট্রেনিং

সাইকেলিং

দৌড়ানো সাঁতার কাটা

৪০ বছর বয়সিদের ব্যায়ামঃ ৪০ বছর বয়সীদের ভেতরে পেটে চর্বি জমা প্রবণতা বেশি দেখা যায় এবং এ বয়সে পেশীর শক্তিও অনেক অংশে কমে যায়। এই কারণে পেশির শক্তি গঠন এবং হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখার জন্য স্ট্রেন্থ এক্সারসাইজ অথবা শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম করা হয়ে থাকে।

৫০ বছর বয়সীদের ব্যায়ামঃ ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে হারে এবং বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এর জন্য এই বয়সি মানুষদের কথা মাথায় রেখে যেই ব্যায়ামগুলো করতে বলা হয় সেগুলো হল,

পিলেট

যোগব্যায়াম 

৬০ ও ৭০বছর বয়সীদের ব্যায়াম: ষাট থেকে ৭০ বছর বয়সীদের জন্য সাধারণত লেগলিট , স্ট্রেচিং , অ্যারোবিক্স এই ব্যায়ামগুলো করতে পারে । এই ব্যায়ামগুলো আপনাকে সুস্থ রাখতে এবং পিঠ সহ বিভিন্ন জায়গার ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে

ঘরে ব্যায়াম করার নিয়ম

অনেক সময় আমরা ব্যস্ততার কারণে জিমে বা বাইরে বাইরে গিয়ে হাঁটাহাঁটি সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতে পারি না। আবার অনেক সময় সময় থাকলেও হয়তো বা আলসেমির কারণে জিমে যাওয়া হয় না। তবে এরকম দিনের পরে দিন চলতে থাকলে প্রেম না করার ফলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত মেয়ের জমে যেতে পারে এবং আপনি বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হতে পারেন। ঘরে ব্যায়াম করার নিয়ম সম্পর্কে। বাইরে না গিয়েও আপনি ঘরে বসে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘরে ব্যায়াম করার নিয়ম গুলো।

প্রথমে সোজা হয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়তে হবে এরপর হাত দুটোকে নিজের সাথে লাগিয়ে রেখে দুই পা একসাথে জোড়া অবস্থায় উপরে উঠাতে হবে এবং আবার নিচে নামাতে হবে কিন্তু পা দুটোকে মেঝের সাথে লাগানো যাবে না। এই ব্যায়ামের জন্য আপনার মাথা ও কোমর মেঝের সাথে লাগিয়ে রাখতে হবে শুধুমাত্র দুই পা একসাথে উঠানামা করবে।

বল দড়ি বা দড়ি লাফ এর সাহায্যে আপনি ঘরে বসে খুব সহজেই ব্যায়াম করতে পারেন। এই দরি লাফ আপনার পুরো শরীরের হাড় এবং মাংসপেশিকে  শক্ত করবে।

সোজা হয়ে প্রথমে মেঝেতে শুয়ে পড়ুন এরপর দুই পায়ের পাতা মেচের সাথে লাগিয়ে হাঁটু ভাঁজ করে রাখুন, আপনার দুই হাত মাথার তলে দিয়ে বারবার বসার চেষ্টা করুন এবং শুয়ে পড়ুন। এই ব্যায়াম করার সময় আপনার শুধু মাথায় এবং কোমর উঠানামা করবে এভাবে বেশ কয়েকবার করুন ।

দুই হাতের উপরে এবং দুই পায়ের পাতার উপরে ভর দিয়ে রাখুন এই ব্যায়ামের জন্য আপনার শুধু পায়ের পাতা এবং হাতের পাতা নিজের সাথে লেগে থাকবে আর পুরো বডি শূন্যে থাকবে এই অবস্থায় পুরো শরীরকে বারবার উঠানো নামানো করুন ।

এছাড়াও আপনি বাড়ির ছাদে অথবা বারান্দায় হাঁটাহাঁটি ও জগিং করতে পারেন ।

সকালে ব্যায়াম করার আগে কি খাওয়া উচিত

সকালে ব্যায়াম করার আগে কি খাওয়া উচিত সেটি আপনাকে অবশ্যই ব্যায়াম করার পূর্বে জেনে নিতে হবে। সকালে ব্যায়াম করার আগে কি খাওয়া উচিত সেটি জানা থাকলে সেই খাবারগুলো আপনি ব্যায়াম করার পূর্বে খেয়ে নিতে পারেন যার ফলে আপনি দুর্বল বোধ করবেন না এবং ব্যায়াম করতেও বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন । কখনোই সম্পূর্ণ ভরা পেটে অথবা সম্পূর্ণ খালি পেটে ব্যায়াম করা উচিত নয়। আবার এ বিষয়টিও লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বেশি খাওয়া না হয়ে যায় কারণ ভরা পেটে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। তাহলে জেনে নেওয়া যাক সকালে প্রেম করার আগে কি খাওয়া উচিত।

আরোও পড়ুনঃ পেটের মেদ কমানোর উপায় গুলো জেনেনিন

জবঃ সকালবেলা ব্যায়াম করার ২০-৩০ মিনিট আগে আপনি কিছুটা জবের তৈরি খাবার খেয়ে নিতে পারেন। এটি ব্যায়ামের সময় আপনার শরীরে শক্তি যোগাবে।

ডিম মধুঃ সকালের ব্যায়ামের পূর্বে আপনি এক পিস পাউরুটি সাথে একটি ডিম ও মধু খেতে পারেন।

দই এবং মধু ঃ দই এবং মধু শরীরের শক্তি যোগানোর ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ কারণে ব্যায়ামের সময় শরীরে শক্তি যোগানোর জন্য, ব্যায়ামের কিছুক্ষণ পূর্বে দই এবং মধু খেয়ে নেয়া ভালো।

ব্যায়াম করার উপকারিতা

আমরা ছোট থেকে এই কথাটি শুনতে শুনতেই বড় হয়েছে ব্যায়াম করার উপকারিতা রয়েছে , ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে , ব্যায়াম করলে শরীর ফিট থাকে। আমরা সাধারণত এইটুকুই জানি যে ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং শরীর ঠিক থাকে কিন্তু ব্যায়াম করার উপকারিতা যে আরো আছে সেটা কি আমরা জানি? হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা যে ব্যায়াম করার উপকারিতা গুলো কি কি । তাহলে জেনে নি  ব্যায়াম করার উপকারিতা গুলো

  • ব্যায়াম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে
  • বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • মনকে সতেজ রাখে
  • শরীরের ফিটনেস ধরে রাখতে সাহায্য করে
  • স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করি
  • ডায়াবেটিস এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
  • হার্ট ভালো রাখে
  • অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
  • শরীরে অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রা ঠিক রাখে
  • হাড় গঠনে সহায়তা করে

ব্যায়াম করার পদ্ধতি ছবি

অনেকেই ব্যায়াম করার পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে মুখে বললে বুঝতে পারেন না । এই কারণে আপনাদের সুবিধার জন্য ব্যায়াম করার পদ্ধতি ছবিগুলো দেওয়া হলো। ব্যায়াম করার পদ্ধতি ছবি গুলো দেখলে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন কোন ব্যায়াম কিভাবে করতে হবে। তাহলে ব্যায়াম করার পদ্ধতি ছবিগুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়।

এই পদ্ধতিতে ব্যায়াম করার জন্য আপনাকে প্রথমে,উপুড় হয়ে শুতে হবে এরপর শরীরকে একটু উঁচু করে দুই হাত এবং পায়ের বুড়ো আঙ্গুলির ওপর ভর দিয়ে শরীরকে শূন্যে তুলে রাখতে হবে এইবার একে একে ডান পা এবং বাম পা ভাঁজ করে হাঁটু বুকের সাথে ঠেকানোর চেষ্টা করতে হবে।

ব্যায়াম করার দ্বিতীয় পদ্ধতি, এই পদ্ধতিতে আপনাকে চিত হয়ে শুতে হবে , এবার দুই হাত মাথার তলে রেখে হাঁটু দুটো ভাগ করে নিতে হবে । হাঁটু দুটো ভাজ করা অবস্থায় আপনাকে মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত
উঠাতে নামাতে হবে মানে বারবার বসার চেষ্টা করতে হবে এবং শুয়ে পড়তে হবে ।

তৃতীয় পদ্ধতি , করার জন্য চিৎ হয়ে শোয়ার পরে আপনাকে দুই হাত মাথার তলে রাখতে হবে এবার ডান হাতের কনুই দিয়ে বাঁ পা এবং বাঁ হাতের কোন দিয়ে ডান পায়ের হাটু ছুতে হবে ।
চতুর্থ পদ্ধতি , এ পদ্ধতিতে ব্যায়াম করার জন্য আপনাকে দুই পায়ের পাতা এবং দুই হাতের উপরে ভর দিয়ে সম্পূর্ণ শরীরকে বারবার ওঠা নামা করাতে হবে। ব্যায়ামের এই পদ্ধতিটিকে পুশ আপ বলা হয়।
প্রথমে আপনাকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে এরপর দুই হাতের পাতা একসাথে জোড়া করে বুকের সাথে ঠকিয়ে রাখতে হবে এবং মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত সামনের দিকে নিয়ে আসতে হবে এবার একে একে দুই পা প্রথমে ডান পা পেছনে সোজা করে নিয়ে যেতে হবে এভাবে কিছুক্ষণ থাকার পরে। ডান পা নিচে নামিয়ে বাম পা পিছনের দিকে নিয়ে গিয়ে কয়েক সেকেন্ড স্থির থাকতে হবে।

সপ্তাহে কতদিন জিম করা উচিত

আমরা মনে করে থাকি যে হয়তো বা সপ্তাহে ১/২ দিন জিমে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে ওয়ার্ক আউট করার মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরকে ফিট এবং সুস্থ রাখতে পারব । এটি আমাদের মনে হয় এই কারণে যে, আমরা সঠিকভাবে জানি না সপ্তাহে কতদিন জিম করা উচিত । আবার মাঝে মাঝে অনেকে এ প্রশ্নটি করেও থাকেন যে সপ্তাহে কতদিন জিম করা উচিত। আজকে তাই আপনাদের এ প্রশ্নের উত্তর জানাবো। সপ্তাহে একদিন অথবা দুই দিন জিমে গেলে আমরা ব্যায়ামের কোন সুফলই ভোগ করতে পারবো না। জিমের মাধ্যমে আমরা যদি শারীরিক সুস্থতা এবং শরীরের ফিটনেস আনতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন যেতে হবে।

শেষ কথা, এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা ব্যায়াম করার সঠিক সময় এবং ব্যায়াম সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন ধরনের জানা-অজানা তথ্য পেয়েছেন। ব্যায়াম করা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখুন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনার শরীরকে ফিট রাখুন এবং সুস্থ জীবন যাপন করুন । সুস্থ জীবন যাপনে  ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url