অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ - অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায়

অ্যানথাক্স ভাইরাসে সাধারণত পশু আক্রান্ত হলেও , এই ভাইরাসের কারণে মানুষ ও আক্রান্ত হতে পারে। অ্যানথাক্স ভাইরাস কারণের জটিল একটি রোগ দেখা দেয় তাই আজকে আমরা অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ এবং অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জানব। এবং এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা আরো জানতে পারবেন অ্যানথাক্স রোগ কিভাবে ছড়ায়।

অ্যানথাক্স রোগ থেকে বাঁচতে হবে অবশ্যই জানতে হবে অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ এবং অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে। আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব অ্যানথাক্স ভাইরাস সম্পর্কে।অ্যানথাক্স ভাইরাস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে হলে অবশ্যই পুরো পোস্টটি আপনাদের করতে হবে , তাই চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক  অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ ও অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায়।

সূচিপত্রঃঅ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ - অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায়

অ্যানথাক্স ভাইরাস কি

অ্যানথাক্স ভাইরাস এর নাম অনেকে হয়তো শুনে থাকবেন , আজকে আমরা অ্যানথাক্স ভাইরাস কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। অ্যানথাক্স হল এক ধরনের ভাইরাস এটি সাধারণত পশুর রোগ তবে অনেক সময় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে মানুষেও।Anthrax শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ থেকে যার অর্থ হল উৎকলিত। অ্যানথাক্স ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগকে তরকা রোগও বলা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় গরু ছাগলের শরীরে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় যার কারণে গরু ও ছাগলের শরীর ফুলে যায় এবং শরীরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ

অ্যানথাক্স ভাইরাস হয়ে থাকে মানুষও যদি অ্যানথাক্স ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়া গরুর মাংস বেশিক্ষণ নাড়াচাড়া করা হয় তাহলে এক্ষেত্রে অ্যানথাক্স ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং যার ফলে মানুষ আক্রান্ত হয়।অ্যানথাক্স আক্রান্ত গরুর বা খাসির মাংস দু তিন ঘন্টা নাড়াচাড়ার ফলেই এই ভাইরাস মানুষ দেহে সংক্রামিত হতে পারে এবং মানব শরীর বিশেষ করে হাত পা চুলকাতে থাকে এবং ফুলে যায়।

১৭৮৫ সালে সর্বপ্রথম জার্মানিতে এই ভাইরাসটি গরু , মহিষ এবং ঘোড়ার ভেতরে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ফ্রান্স, আমেরিকা ,কানাডা , নেদারল্যান্ড , অস্ট্রিয়া , স্পেন সহ আরও বিভিন্ন দেশে অ্যানথাক্স ভাইরাস এর সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায় এমনকি বাংলাদেশেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় গরু ছাগল এবং মানুষ।অ্যানথাক্স ভাইরাস এর জীবনে অত্যন্ত মারাত্মক ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইমেইল এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এই ভাইরাস যার ফলে ২২ জন লোক আক্রান্ত হয়েছিল এবং এর মধ্যে থেকে ৫ জন মৃত্যুবরণ করেছিল।

অ্যানথাক্স ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়

অ্যানথ্রাক্স এক প্রকার ভাইরাস। এটি গরু-ছাগল, ভেড়া, মহিষকে আক্রমণ করে। আক্রান্ত পশুর দ্বারা মানুষের শরীরে সংক্রামিত হয়। আক্রান্ত পশুর মাংস খেলে, আক্রান্ত পশুর মাংস পুকুর বা নদীর পানিতে পরিষ্কার করলে এবং ঐ পানিতে গোসল করলে, গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করলে এ রোগ ছড়ায়। গবাদি পশুর থাকার স্থান অপরিষ্কার হলে এই রোগ বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্যদিকে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত জীবের মৃতদেহ অ্যানথ্রাক্স স্পোরের একটি অন্যতম উৎস। অ্যানথ্রাক্স স্পোর চর্ম বা টিস্যুর সংস্পর্শে আসার পর ৫৭-৬০ দিন পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। বাতাসের মাধ্যমে সরাসরি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে স্পোর ফুসফুসে প্রবেশ করলে ২-৩ দিনের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। স্পোরমিশ্রিত খাবার গ্রহন করলে পশু বা মানবদেহের পাকস্থলীতে রোগ বাসা বাঁধে।

অ্যানথাক্স রোগের প্রকারভেদ

এখন আমরা অ্যানথাক্স রোগের প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নিবো কারণ , এই রোগটি বেশ কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। তাই অ্যানথাক্স রোগের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানা থাকলে সহজেই এই রোস্টের চিকিৎসা করানো সম্ভব হবে তাই চলুন প্রথমে আমরা জেনে নিই অ্যানথাক্স রোগের প্রকারভেদ সম্পর্কে।অ্যানথ্রাক্স রোগকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে- 
১. Cutaenous Anthrax: এ ধরনের Anthrax-এর স্পোর বা অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর লোম বা চামড়া মানবদেহের অতি সূক্ষ্ম ক্ষতস্থানের সংস্পর্শে এলে মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ক্ষতস্থানে স্পোর দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে থাকে এবং ১-৭ দিনের মধ্যে ত্বকের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত তৈরি করে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুই হাত, মাথা এবং ঘাড়ে এই ক্ষত লক্ষ করা যায়। ক্ষতস্থানগুলোতে চুলকানি থাকে তবে ব্যাথা থাকে না। 
২. Gastrointestinal Anthrax: এ রোগ আক্রান্ত পশুর মাংস খেলে হয়ে থাকে। Anthrax-এ আক্রান্ত পশুর মাংস ভক্ষণ করলে বা খাবারের মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্স জীবাণুর স্পোর পেটের মধ্যে প্রবেশ করলে, স্পোর ভেঙ্গে দ্রুত বংশবিস্তার করে এবং নিফেকশন তৈরি করে। ইনলেসটান আক্রান্তের ফলে পেটে ব্যথা হয়, বমি বমি ভাব থাকে। পাতলা পায়খানার সাথে রক্ত যেতে পারে এবং শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। ২-৩ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলোপূর্ণমাত্রায় প্রকাশ পায়। 
৩. Inhalation Anthrax: শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। অ্যানথ্রাক্স- এর স্পোর বাতাসের মাধ্যমে শ্বাসনালী দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করে। ফুসফুসে আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি, মাথাব্যথা ও মাংসপেশিতে ফুসকুঁড়ি দেখা দেয়। ২-৭ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২মাস পর্যন্ত স্পোর বা জীবানু সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে । এ ধরনের অ্যানথ্রাক্স ফুসফুসে আক্রমণ করার কয়েকদিনের মধ্যে নিওমোনিয়া দেখা দেয়। এ প্রকার অ্যানথ্রাক্স আক্রমণে মৃত্যুর হার ১০০% আর অতি অল্প সময়ের মধ্যে জীবাণু তার বাহককে মেরে ফেলে। উপরিউক্ত তিন ধরনের অ্যানথ্রাক্স ছাড়াও Anthrax Meningitis নামে মস্তিষ্ক সংক্রান্ত অ্যানথ্রাক্সও দেখা যায়।

অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ

অ্যানথাক্স মূলত পশুর রোগ হলেও অনেক সময় এ রোগ মানুষের ভেতরেও ছড়ায় ,অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ জেনে রাখা উচিত। দেশের অধিকাংশ মানুষই অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানে না, তাই আজকে আমরা আলোচনা করব এবং জানবো অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ গুলো।
অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুদের শারীরিক তাপমাত্রা প্রচুর বেড়ে যায়। পশুর ও মুখ দিয়ে রক্ত আসে। শরীরে ফুলাজখম হয় এবং কখনো কখনো ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। অ্যানথ্রাক্স পশুর মাংস নাড়াচাড়া করলে মানুষের শরীরে সংক্রামিত হয় এবং হাত পা ফুলে যায়, গায়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর বা ব্যক্তির চামড়ায় প্রথমে ছোট পোকার কামড়ের মতো দেখা যায়। ২-১ দিনের মধ্যে তা বাড়তে থাকে ও ক্ষতের পরিণত করে।

অ্যানথাক্স রোগের ভয়াবহতা 

অ্যানথ্রাক্সে রোগের ভয়াবহতা খুবই মারাত্মক। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন ডেইরি ফার্মে প্রায় ১০০ গবাদিপশু এই রোগে মারা গেছে। সরকারি হিসাব মতে ৫০৮ জন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাই চলুন আজকে আমরা ভালোভাবে জেনে নিই অ্যানথাক্স রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে।  অ্যানথ্রাক্স-এর কারণে নিম্নলিখিত কুফলগুলো লক্ষ্য করা যায়_ 
১. গবাদিপশুর ব্যবসাকারী ও কসাইশ্রেণি বেকার হয়ে পড়ে। 
২. অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকায় আমিষের অভাব পরিলক্ষিত হয়। 
৩. অ্যানথ্রাক্সের কারণে চামড়া শিল্পে বিপর্যয় নেমে আসে। ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা থেকে দেশ বঞ্চিত হয়। 
৪. অ্যানথ্রাক্সের আতঙ্কে বিশেষ করে গরুর দাম কমে যাওয়ায় কৃষকেরা গরু লালন-পালনে নিরুৎসাহিত হয়। 
৫. সহজলভ্য গরুর মাংস দরিদ্র শ্রেণিরা ভোগ করতে না পারায় বেশি দামে খাসির বা মুরগির মাংস খেতে হয়। 
৬. হঠাৎ দেশে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্কে গো-মহিষের ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশে অ্যানথাক্স ভাইরাসের পরিস্থিতি

এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক  বাংলাদেশে অ্যানথাক্স ভাইরাসের পরিস্থিতি ।বাংলাদেশে প্রথম অ্যানথ্রাক্স ধরা পড়ে সিরাজগঞ্জে। দেশের উত্তরাঞ্চলের অনেক স্থানেই এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ঢাকার অদূরে গাজীপুরে অ্যানথ্রাক্স রোগে অনেক গরু আক্রান্ত হয়ে পড়ে। বর্তমান চিকিৎসকরা এ ভাইরাস প্রতিরোধের টিকা বা ভ্যাকসিন বের করায় অ্যানথ্রাক্স আতঙ্কের হার ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। ফিরে আসছে স্বাভাবিক পরিবেশ। আশা করছি বাংলাদেশে অ্যানথাক্স ভাইরাসের পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পেয়েছে

চিকিৎসা

অ্যানথ্রাক্স  আক্রান্ত হলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা উচিত , এই রোগের চিকিৎসা করতে যে ওষুধগুলো ব্যবহার হয় সেগুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করব ।পেনিসিলিন জাতীয় সিপ্রোফ্লক্সাসিন, লিফাফ্লোক্সমিন, গ্যাটিক্লোক্সমিন, ডক্সিসাইক্লিন, অ্যামোক্সিসিলিন, ক্লোরাম, ফেনকল ইত্যাদি অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত ব্যক্তি ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া বায়োথ্রাক্স ভেকসিন নামে যে ঔষধ আছে তার ৬টি ডোজ ব্যবহার করা।

অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায়

আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জানে না। তাই আজকে আমরা অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করব। যারা অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জানেন না তারা এ বিষয়টি জেনে নিতে পারেন। কথা না বাড়িয়ে এবার তাহলে জেনে নেওয়া যাক অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায় গুলো।
১. ভেকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রতিরোধ করা সম্ভব। অ্যানথ্রাক্স বায়োথাক্স ভেকসিন নামে পাওয়া যায়। দুই পর্যায়ে ৬টি ডোজ যেমন- ০,২,৪ সপ্তাহে এবং ৬,১২,১৮ মাস এ পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হয়। 
২. অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে ও পেনিসিলিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক প্রদান করতে হবে। 
৩. গবাদিপশুর থাকার স্থান পরিষ্কার রাখতে হবে। 
৪. অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গবাদি পশু মারা গেলে মাটির নিচে চাপা দিতে হবে এবং মলমূত্র ও রক্ত জীবাণু নাশক দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। 
৫. যত্রতত্র পরীক্ষা ছাড়া গবাদিপশু জবাই করা যাবে না। 
৬. সংবাদপত্র, বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক দূরীকরণের জন্য অনুষ্ঠান প্রচার করতে হবে। 
৭. অ্যানথ্রাক্স সম্পর্কে আলোচনা সভা, র‍্যালি, সিম্পোজিয়ামের ব্যবস্থা করে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
মন্তব্য, পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এতক্ষণে নিশ্চয় অ্যানথাক্স রোগের লক্ষণ এবং অ্যানথাক্স রোগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিয়েছে।অ্যানথাক্স রোগটি যেহেতু অত্যন্ত জটিল এবং মারাত্মক রোগ আর এই রোগটি ছড়ায় গরু-ছাগলের মাধ্যমে এই কারণে অ্যানথাক্স আক্রান্ত গরু ছাগল এবং এর মাংস থেকে দূরে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url