শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির ৭টি উপায় - শ্বাসকষ্ট কেন হয়
শ্বাসকষ্ট অত্যন্ত জটিল একটি সমস্যা এবং যেকোনো বয়সী মানুষরই সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাধারণত শ্বাসযন্ত্র অর্থাৎ ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যার কারণে শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে , এছাড়াও আরো কিছু আনুষঙ্গিক কারণ থাকতে পারে শ্বাসকষ্টের পেছনে। আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব শ্বাসকষ্ট নিয়ে এবং জানাবো শ্বাসকষ্ট কেন হয় ও শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে। আজকে আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির ৭টি উপায়।
অনেক মানুষ রয়েছে যারা শ্বাসকষ্টের যন্ত্রণাদায়ক সমস্যায় ভুগে থাকেন, সেসব রোগীদের কথা চিন্তা করে আজকে আপনাদের শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায় জানাবো। আজকের এই পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির ৭টি উপায় সম্পর্কে এবং এর পাশাপাশি আরো জানবেন শ্বাসকষ্ট কেন হয় শ্বাসকষ্ট লক্ষণ এবং শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির দোয়া গুলোও। আপনি যদি দুইজন বিশ্বাসের সাথে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির দোয়া গুলো নিয়মিতভাবে আমল করেন তাহলে আশা করা যায় ইনশাল্লাহ আল্লাহ পাক এই দোয়াগুলোর বরকতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে মুক্তি দেবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শ্বাসকষ্ট বিষয়ক এই পোস্টটি পড়ে ফেলা যাক এবং জেনে নেওয়া যাক শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায় ও শ্বাসকষ্ট কেন হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত।সূচিপত্রঃ শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায় - শ্বাসকষ্ট কেন হয়
শ্বাসকষ্ট কেন হয়
অনেকেই শ্বাসকষ্টের যন্ত্রণাদায়ক সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং অনেক সময়
মানুষ ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারে না শ্বাসকষ্টের কারণ সম্পর্কে। আর এই কারণে
মূলত আজকে আমরা আলোচনা করব শ্বাসকষ্ট কেন হয় এই বিষয়টি নিয়ে। শ্বাসকষ্ট কেন
হয় এই বিষয়টি জানা থাকলে অনেক সময় শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে নিজেদেরকে সুরক্ষা
দেয়া যাবে , তাই যারা শ্বাসকষ্ট কেন হয় এই বিষয়টি জানেন না তারা অবশ্যই
বিষয়টি ভালোভাবে জেনে নিতে পারেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে শ্বাসকষ্ট কেন হয়
তা জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ
কোল্ড এলার্জি দূর করার উপায়
শ্বাসকষ্ট হওয়ার পেছনে একটি নয় একাধিক কারণ থাকতে পারে। তবে শ্বাসকষ্ট হওয়ার
বিশেষ উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো- অতিরিক্ত সর্দি লাগা , এলার্জি ,
সাইনোসাইটিস , নিউমোনিয়া , অ্যাডনয়েড , অ্যাজমা , ফুসফুসে পানি জমা ,
ব্রংকাইটিস ইত্যাদি কারণে সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হতে দেখা যায়।
এছাড়াও শ্বাসকষ্টের ছোট বড় আরো বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।
শ্বাসকষ্ট লক্ষণ
এবার আপনাদেরকে শ্বাসকষ্ট লক্ষণ গুলো জানাবো, কেননা শ্বাসকষ্ট লক্ষণ গুলো জানা না
থাকার কারণেই অনেক সময় রোগীরা আসল সমস্যাটি ধরতে পারে না এবং যার ফলে চিকিৎসা
গ্রহণ করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই শ্বাসকষ্ট লক্ষণ গুলো জেনে রাখা। শ্বাসকষ্ট
হলে শরীরের যেসব লক্ষণ বা উপসর্গগুলো প্রকাশ পায় সেগুলো হলো,
- বুক চাপ ধরা
- বুকের ভেতরে সাঁই-শুঁই শব্দ হওয়া
- নিঃশ্বাস আটকে যাওয়ার মতন অনুভূতি হওয়া
-
ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেয়া ও নিঃশ্বাস ছাড়া
- ঠান্ডা এবং গরমে নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া
- একসাথে অতিরিক্ত হাঁচি হওয়া এবং সর্দি লাগার মতন নাক দিয়ে পানি ঝরা
শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায়
আপনাদের মধ্যে যারা শ্বাসকষ্টের রোগী রয়েছে তারা প্রায় সময়ই শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায় গুলো জানতে চেয়ে থাকে। শ্বাসকষ্ট যেহেতু অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক একটি সমস্যা তাই শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায় গুলো অবশ্যই শ্বাসকষ্টের রোগীদের ভালোভাবে জেনে রাখা উচিত। আমাদের সম্পূর্ণ জীবনটাই শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর নির্ভরশীল তাই এই শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা হলে অবশ্যই সব সময় সচেতন থাকা উচিত, তাই যারা শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায় গুলো এখন পর্যন্ত ভালোভাবে জানে না তারা অবশ্যই শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায় গুলো ভালোভাবে জেনে নিন, এখন আপনাদের জানাবো শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির ৭টি উপায়।
ব্ল্যাক কফি পান করুনঃ বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে ব্ল্যাক কফি আমাদের
ফুসফুসের কার্যকরিতা বৃদ্ধি করতে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে
পারে। কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন নামক উপাদান শ্বাসনালীর গুলোকে শিথিল করার
মাধ্যমে শ্বাসকষ্ট দূর করতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে
মুক্ত হতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে ব্ল্যাক কফি পান করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
নাকের মাংস কমানোর উপায় এবং নাকের মাংস বাড়ার লক্ষণ
মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়াঃ শ্বাসকষ্টের সমস্যা বৃদ্ধি পেলে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যায় , ঘন ঘন ঘাস প্রশ্বাস নেওয়ার এই প্রবণতাটিকে কমাতে সাহায্য করতে পারে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া। মুখ দিয়ে শ্বাস নিলে ঘনঘন নিঃশ্বাস নেওয়ার প্রবণতা কমে আসবে এবং শ্বাসকষ্টের অসুবিধা থেকে আপনি মুক্তি পাবেন।
ঠান্ডা বাতাস নিয়েঃ গরমে ঠান্ডা বাতাস শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে
পারে। এ কারণে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে ফ্যানের কাছাকাছি বসে বাতাস নেয়ার চেষ্টা
করুন এতে আপনার শ্বাসকষ্টের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি অনেকটাই কমে যাবে। তবে অবশ্যই
খেয়াল রাখবেন এই বাতাসটি যেন অতিরিক্ত ঠান্ডা না হয়।
আদাঃ শ্বাসকষ্ট দূর করার জন্য আদা একটি বেশ কার্যকরী উপাদান। শ্বাসকষ্টের
প্রবণতা দূর করতে আদা বিশেষভাবে সহায়তা করতে পারি কারণ আদার ভিতর
রয়েছে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা অন্যান্য প্রদাহ দূর করার পাশাপাশি
ফুসফুসের দেহ দূর করতেও সাহায্য করে থাকে।
ভাপঃ শীতের কারণে আপনার যদি শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পায় তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি সাহায্য নিতে পারেন গরম ভাপ নেয়ার। গরম ভাপ নিলে ফুসফুসের জমে থাকা দূর হয়ে শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
আবহাওয়া বদলের সময় সচেতন থাকুনঃ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় সিজন চেঞ্জ এর
সময় বাতাসের আদ্রতা নাকের মধ্যে দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশের মাধ্যমে শ্বাসকষ্টের
প্রবণতা বেড়ে যায় , এই সময় দুলা বা কুয়াশা নাকের ভেতরে প্রবেশের মধ্যে দিয়েও
শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায় তাই আবহাওয়া বদলের সময় শ্বাসকষ্ট
রোগীদেরকে সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনে চলতে হবে। এই সময়গুলোতে বাইরে বেরোনোর সময়
মাস্ক ব্যবহার করলেও শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকেও অনেকটা মুক্ত থাকা যায়।
শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির দোয়া
আমাদের বেঁচে থাকার জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী । নিঃশ্বাস
ছাড়া আমরা কোন একটি মুহূর্তের কথাও চিন্তা করতে পারিনা আর তাই যখন আমাদের
শ্বাসযন্ত্রের কোন অসুবিধা হয় তখন অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়ি। কিন্তু আল্লাহ পাক
কুরআনের মধ্যে এরও সমাধান রেখেছেন। বেশ কিছু সূরার আয়াত বা দুয়া রয়েছে
যেগুলোর মাধ্যমে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি নিতে পারে। আজকে আপনাদের জানাবো শ্বাসকষ্ট
থেকে মুক্তির দোয়া গুলো। যারা শ্বাসকষ্টের রোগী রয়েছেন তারা অবশ্যই শ্বাসকষ্ট
থেকে মুক্তির দোয়া গুলো জেনে রাখুন , এই দোয়াগুলো যদি আপনি মনে বানিয়ে বিশ্বাস
এর সাথে আমল করেন তাহলে আশা করা যায় ইনশাআল্লাহ আল্লাহপাক এই দোয়াগুলোর
বরকতে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি মিলাবেন। শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির দোয়াগুলো হলো ,
- ওয়া নুনাজ্জিলু মিনাল ক্বুরআ’নি মা হুয়া শিফাউও ওয়া রাহমাতিুল লিলমু’মিনি-ন (বনি ইসরাইল আয়াত ৮৩)
- ওয়া ইজা মারিদতু ফা হুয়া ইয়াশফি-নি।) অর্থ : যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।( শুরা শুয়ারা আয়াত ৮০)
- ওয়া ইয়াশফি ছুদু-রা ক্বাওমিম মু’মিনি-ন।) অর্থ : এবং মু’মিনদের (মুসলমানদের) অন্তরসমূহ শান্ত করে দেন।(সূরা তওবা আয়াত ১৪)
- ওয়া শিফাউ’ল লিমা- ফিচ্ছুদু-রি ওয়া হুদাও ওয়া রাহমাতুল লিল মু’মিনি-ন।) অর্থ : এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।(সূরা ইউনুস আয়াত ৫৭)
- এছাড়াও সূরা ফাতিহার মধ্যে আল্লাহ পাক যেকোন দূরারোগ্য ব্যাধি প্রতিকার দেখেছেন। অপরদিকে , আয়েশা (রা) এর একটি বর্ণনা থেকে জানতে পারা যায় যে , কোন ব্যক্তি যখন অসুস্থ হত নবীজি (সা) তার ডান হাত রোগীর শরীরে গুলিয়ে এই দোয়াটি বলতেন -আজহাবিল বা’সা রব্বান না-সি, ওয়াশফি আনতাশ শা-ফি-, লা শিফাআ’ ইল্লা- শিফা-উকা শিফা-আ’ লা ইউগাদিরু সাক্বমা।) অর্থাৎ হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক! তুমি কষ্ট দূর কর এবং আরোগ্য দান কর।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url