বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ - বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে করণীয়
আজকে আপনাদের সাথে বাচ্চাদের একটি মারাত্মক রোগ সম্পর্কে আলোচনা করব আর সেই রোগটির নাম হল নিউমোনিয়া। আপনারা জানেন বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই নিউমোনিয়া নামক রোগটি কতটা মারাত্মক পর্যায়ে যেতে পারি। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতি বছর প্রায় ৬০% বাচ্চা বা তারও বেশি সংখ্যক বাচ্চা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তাই অবশ্যই এই বিষয়ে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী আর এ কারণে আজকে আপনাদেরকে বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ এবং বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে করণীয় বিষয় সম্পর্কে জানাবেন।
শীতকাল আসলেই বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার হার এবং নিউমোনিয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যায় তাই অবশ্যই সকল পিতা-মাতা বা অভিভাবককে নিউমোনিয়া বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং জানতে হবে বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ এবং বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে করণীয় বিষয় সম্পর্কে শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় এবং নিউমোনিয়া কেন হয় এই বিষয়গুলো সঠিকভাবে জেনে নিতে হবে। আর যখন আপনারা নিউমোনিয়া সম্পর্কে সকল বিষয় বিস্তারিতভাবে জানবেন তখনই এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন হতে পারবেন।তাই চলুন আজ জেনে নেয়া যাক বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ এবং বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে করণীয়, আর বাচ্চাদের এই সেনসিটিভ গ্রুপটি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়তে হবে।
বাচ্চাদের নিউমোনিয়া কেন হয়
আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন বাচ্চাদের জন্য ভয়ংকর একটি মারাত্মক রোগ হলে নিউমোনিয়া। নিউমোনিয়ার কারণে প্রতি বছরই অসংখ্য শিশু মারা যায়। তাই শিশুকে নিউমোনিয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে এই রোগটি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। আর সচেতন থাকার জন্য শিশুর পিতা মাতা বা অভিভাবককে জানতে হবে বাচ্চাদের নিউমোনিয়া কেন হয়। কেননা যখন শিশুর অভিভাবক বা পিতা-মাতা জানবে বাচ্চাদের নিউমোনিয়া কেন হয় তখন এই বিষয়গুলো থেকে শিশুদেরকে দূরে রাখতে পারবে। তাই আজকে আপনাদের সাথে বাচ্চাদের নিউমোনিয়া কেন হয় এই বিষয়টি নিয়ে জানাবো।
শীতকাল বাচ্চাদের জন্য নিউমোনিয়ার একটি মারাত্মক টাইম তাই এই সময় বাচ্চাদের এক্সট্রা কেয়ার নিতে হবে। বাচ্চাদের ফুসফুসে যখন রোগ জীবাণু সংক্রমনের কারণ নেই প্রদাহের সৃষ্টি হয় এই সময় অথবা ফুসফুসের এক ধরনের বিশেষ ইনফেকশনের কারণে বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। এছাড়াও ভাইরাস , ফাঙ্গাস , টিবি এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। কোনো নিউমোনিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি বা বাচ্চাদের সংস্পর্শে থাকা শিশুদের নিউমোনিয়া হতে পারে যেন না আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকার কারণে নিউমোনিয়ার জীবনু
বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ
এবার আপনাদের জানাবো বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ। বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ গুলো জেনে রাখা প্রত্যেক অভিভাবকেরই গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব কেন না অনেক সময় বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ গুলো জানা না থাকার কারণে চিকিৎসা শুরু করতে অনেক দেরি হয়ে যায় এবং সে ক্ষেত্রে অনেক শিশু মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায় এমনকি অনেক ক্ষেত্রে শিশুর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ গুলো যারা জানেন না তারা অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পোস্টের এই অংশটি পড়ুন এবং বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ গুলো জেনে নিন।
- তিব্র জ্বর
- শ্বাসকষ্ট
- সর্দি ,কাশি
- বুকে ঘড়ঘড় শব্দ
- দ্রুত নিঃশ্বাস নেয়া
- বুক এবং পাঁজর কিছুটা ভেতর দিকে ঢুকে যাওয়া
- হার্টবিট বা পার্টস রেট বেড়ে যাওয়া
- খাওয়া দাওয়া না করা
- বমি
- ডায়রিয়া
- খিঁচুনি
বাচ্চাদের নিউমোনিয়া ভাইরাসের নাম
নিউমোনিয়া কি বাহিত রোগ
বাচ্চাদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায়
এবার আপনাদের জানাবো বাচ্চাদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে কারণ , শীত আসলেই যেহেতু বাচ্চাদের নিউমোনিয়া রোগটি অনেক বেড়ে যায় তাই বাচ্চাদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় গুলো জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। তবেবাচ্চাদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় এগুলো শুধু জানলে হবে না এর পাশাপাশি এই বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে মেনে চলতে হবে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে বাচ্চাদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
আরো পড়ুনঃ বেলের শরবতের উপকারিতা
বাচ্চাদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে যে শিশুর জন্মের এক বছরের মধ্যে নিউমোনিয়ার টিকা গ্রহণ করানো। শিশুর জন্মের পরে শুধু নিউমোনিয়ার টিকা নয় এর পাশাপাশি নিউমোকক্কাস, হাম , হুপিং কাশি ইত্যাদির টিকা দেওয়াও বিশেষ প্রয়োজন। কোন বিশেষ অসুবিধা ছাড়া ছয় মাসে কম বয়সী শিশুদেরকে মায়ের বুকের দুধ ছাড়ানো যাবে না কেননা মায়ের বুকের দুধ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ করে নিউমোনিয়া প্রতিরোধে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে এবং মায়ের বুকের দুধ অন্য যেকোনো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
যারা এইচআইভি পজেটিভ শিশু রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে তাই এই ধরনের শিশুদেরকে সবসময় ডাক্তারি পরামর্শে রাখা এবং সে অনুযায়ী বিভিন্ন ঔষধ বা অ্যান্টিবায়োটিক চালিয়ে যেতে হবে। শিশুদেরকে ছোট থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাখতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধির মেনে চলতে শেখাতে হবে এবং পাশাপাশি দূষিত বায়ুর স্থান থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। শিশুর সামনে বা আশেপাশে কখনো স্মোকিং করা যাবে না।
বাচ্চাদেরকে নিউমোনিয়ার হাত থেকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই নিউমোনিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি বা শিশুদের সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখতে হয় এবং শিশুদেরকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং ধূলো-ময়লা , অস্বাস্থ্য পরিবেশ থেকে দূরে রাখতে হবে।শিশুকে মোলে নেয়া বা আদর করার আগেও নিজেদেরকে যথেষ্ট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে এবং বারবার হাত দিতে হবে।আসা করি বাচ্চাদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় গুলো বুঝেছেন।
বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে করণীয়
বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ , কারণ এবং প্রতিরোধের উপায় জানার পাশাপাশি বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে করণীয় বিষয় সম্পর্কেও।যে সব বাবা মায়েরা বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে করণীয় সম্পর্কে জানেন না তারা অবশ্যই বিষয়টি জেনে নিন। আপনারা সকলেই জানেন নিউমোনিয়া রোগটির সাথে ঠান্ডা লাগার একটি প্রবণতা রয়েছে এবং এই রোগে উপসর্গ হিসেবে সর্দি কাশি হয়ে থাকে আর সর্দিতে যেহেতু বাচ্চাদের অধিকাংশ সময়ে না বন্ধ থাকে তাই চেষ্টা করতে হবে নিউমোনিয়া হলে বাচ্চাদের নাক সব সময় রাখার যাতে সহজে নিঃশ্বাস চলাচল করতে পারি এবং বাচ্চার খাওয়ার সময় কোন অসুবিধা না হয়।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছোট বাচ্চাদের যদি অতিরিক্ত জ্বর থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে জলপট্টি দেয়ার মাধ্যমে জ্বর কমানোর চেষ্টা করতে হবে , আর বাচ্চা যদি কিছুটা বড় হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদেরকে তরল জাতীয় খাবার যেমন -কুসুম গরম পানি , লেবুর শরবত , চা , মধু খাওয়ানো যেতে পারে এতে কাশির সমস্যা অনেকটাই কম হবে। বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে যেহেতু খাদ্যের রুচি অনেকটাই কমে যায় তাই এক্ষেত্রে শিশুকে অল্প পরিমাণে বারবার খেতে দিতে হবে।
বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার চিকিৎসা
এবার চলুন বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক। শিশু নিউমোনিয়া আক্রান্ত হলে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সনাক্ত করা উচিত নিউমোনিয়ার পেছনের কারণ অর্থাৎ কোন কারনের জন্য শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত সেই বিষয়টি প্রথমে ফাইন্ড আউট করতে হবে এবং এরপরে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করতে হবে।শিশুর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পেছনে যদি ব্যাকটেরিয়া দায়ী হয়ে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করার মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হবে আর যদি নিউমোনিয়ার পেছনের কারণ ভাইরাসজনিত হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই এন্টিভাইরাল ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।নিউমোনিয়ার সঠিক চিকিৎসা শুরু করার পাশাপাশি শিশুকে রাখতে হবে পর্যাপ্ত বিশ্রামে এবং খেতে দিতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার , তরল জাতীয় খাবার।
আরো পড়ুনঃ হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয়
মন্তব্য, প্রিয় পাঠকের আপনারা নিশ্চয়ই পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ এবং বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে করনীয় বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিয়েছেন এবং এর পাশাপাশি বাচ্চাদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধে রূপায় এবং নিউমোনিয়া চিকিৎসা জেনেছেন। যেহেতু আপনারা বাচ্চাদের নিউমোনিয়া সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জেনেছেন তাই অবশ্যই শীতকালে এবং ছোট বাচ্চাদেরকে এই রোগ থেকে দূরে রাখার জন্য যথেষ্ট সচেতনতা গ্রহণ করুন। কেননা প্রতি বছরই দেশের অসংখ্য বাচ্চা এই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url